জকিগঞ্জে শেষ পর্যন্ত দ্বিমুখী-ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস, শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কারা?

আল হাছিব তাপাদার, জকিগঞ্জ টুডে:: পঞ্চম ধাপে বুধবার জকিগঞ্জের ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ করা হবে। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ করতে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন ও পুলিশ। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানাগেছে, প্রতিটি কেন্দ্রে মঙ্গলবার নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌছে যাবে। নির্বাচনী কর্মকর্তা ছাড়াও পর্যাপ্ত সংখ্যাক পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার সদস্য, স্ট্রাইকিং ফোর্স, জুডিসিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণসহ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। ৯টি ইউপির মধ্যে ১১টি ভোট কেন্দ্রকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানাগেছে।

এদিকে, সোমবার মধ্যে রাত থেকে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ হলেও প্রার্থীরা নিরবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। নিরব প্রচারণায় চারিদেকে টাকার ছড়াছড়ি। সরগরম নির্বাচনী এলাকাগুলো। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ঘরানো, আওয়ামী বিদ্রোহী স্বতন্ত্র, জাতীয়পার্টিসহ অনান্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট নিয়ে চলছে কঠিন হিসেব নিকেশ। নৌকার ভোটে বিদ্রোহীদের তৎপরতায় প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জে বেকায়দায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে বহিস্কারের পরও তাঁরা মাঠে শক্তিশালী অবস্থান গড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। অনেক ইউপিতে নৌকার বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্ব›দ্বীতা গড়ে তুলছেন বিদ্রোহীরা। উপজেলার ৯টি ইউপির মধ্যে ৫টিতেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে আছেন। বিভক্তি আছে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে। এতে নৌকার প্রার্থীরা মারাত্মক বিপাকে আছেন। আর যেসব ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী নেই সে ইউপিগুলোতেও নতুন নতুন মেরুকরণ হচ্ছে। একক প্রার্থী হয়েও স্বস্থিতে নেই প্রার্থী ও সমর্থকরা। ভোটের মাঠ দখলে কঠিন পরিস্থিতি টপকাতে হচ্ছে সকল প্রার্থীকেই। অনেক জায়গায় দলীয় নেতাকর্মীরা ভিতরে ভিতরে অন্য প্রার্থীকে সহযোগীতা করছেন এমনটাও অভিযোগ রয়েছে। এরপরও বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী নৌকার প্রার্থীরা।

প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতাদের মতে, বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীদের বিভক্তি, নৌকার প্রার্থীর অবহেলা, বেশি আত্মবিশ্বাস, কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা না করা, অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীকে পর্দার আড়াল থেকে শেল্টার দেয়াসহ নানা কারণে কয়েকটি ইউপিতে ভরাডুবির আশঙ্কা রয়েছে। বিপরীতে একাধিক ইউপিতে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ঘরানো স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন। অনেক এলাকায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সভা সমাবেশে পদ বাঁচানোর জন্য কথা বললেও আড়ালে শেষ মুহুর্তে দলের বিদ্রোহী কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু কঠিন পরিস্থিতি টপকিয়ে শেষ পর্যন্ত কয়েকটি ইউপিতে নৌকার মাঝিদের বিজয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলের প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। অন্যদিকে বিএনপি ঘরানো প্রার্থীসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অবাদ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন এমনটাই তাদের দাবী।

জকিগঞ্জের বারহাল ইউপিতে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুরুল হামিদ চৌধুরী। বিদ্রোহী প্রার্থী ইউপি সদস্য সুমন আহমদ চৌধুরী। দলীয় প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর ভোট ভাগাভাগিতে জামায়াত নেতা মোস্তাক আহমদ অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। তবে ভোটের হাওয়া পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ ইউপিতে বিএনপি ঘরানোর প্রার্থী বুরহান উদ্দিন রনি, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সবুর চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুক্তাউর রহমান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী জিয়াউর রহমান চৌধুরী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। শেষ পর্যন্ত মূল লড়াইয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ইউপিতে মোট ২৩ হাজার ৩৫৬জন ভোটার। বিরশ্রী ইউনিয়নে দলের একক প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার। তাঁর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি টক্কর দিচ্ছেন বিএনপি ঘরানো প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম চৌধুরী পানু। তাদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি ভোটের লড়াই হবে। শেষ পর্যন্ত সামান্য ভোটের ব্যবধানে ফলাফল হতে পারে। বিরশ্রী ইউপিতে মোট ১৭ হাজার ৬১৮জন ভোটার রয়েছেন। কাজলসার ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী জুলকারনাইন লস্কর। তাঁর সাথে মাঠে টক্কর দিচ্ছেন বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আশরাফুল আম্বিয়া। বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলের কোন্দলে এ ইউপিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী রশিদ বাহাদুরসহ অন্য প্রার্থীরা সুযোগ নিচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ইউপিতে বিএনপি ঘরানো সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট মোস্তাক আহমদ, বিএনপি ঘরানো চেরাগ আলী, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী আল ইমরান হোসেন, জমিয়তের প্রার্থী মাওলানা হুমায়ুন কবির লস্কর কয়েছ প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আছেন। কাজলসার ইউপিতে মোট ১৮ হাজার ৭৭৬জন ভোটার রয়েছেন। খলাছড়া ইউনিয়নে দু’বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান কবির আহমদ এবারও নৌকার মাঝি হয়েছেন। ইউনিয়ন কার্যালয়ের জমি-সংক্রান্ত জটিলতা নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর। তাঁর সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মাঠ গরম করে রেখেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল গফুর। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হকসহ অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ভোটের মাঠে শক্ত প্রতিদ্ব›িদ্বতা গড়ে তুলেছেন। প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মস্তুফা মাসুক, স্বতন্ত্র প্রার্থী জামরুল হক। তবে শেষ পর্যন্ত ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। খলাছড়া ইউপিতে মোট ১৪ হাজার ২৪৪জন ভোটার।

জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নে দলের একক প্রার্থী মাওলানা আফতাব আহমদ। তিনি আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ইসলামী দলগুলোর সাড়া পেয়েছেন। সমর্থন দিয়েছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। ফলে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও তাঁর সাথে মাঠে শক্ত অবস্থান তৈরী করে নিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আহমদ। শেষ পর্যন্ত আফতাব আহমদ ও হাসান আহমদের মধ্যে ভোটের লড়াই হবার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে জামায়াত নেতা ফয়েজ আহমদও ভোটের মাঠ কাবু করতে কৌশলী অবস্থানে রয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সালেহ আহমদ হাতপাখা, জমিয়তের দলীয় প্রার্থী জামিল আহমদ আশুক প্রতিদ্ব›িদ্বতায় রয়েছেন। এখানে মোট ১০ হাজার ৯২৫জন ভোটার। সুলতানপুর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ চৌধুরী। তাঁর সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মাঠে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রয়েছেন। শেষ সময়ে জাতীয় পার্টির বড় একটি অংশের সমর্থন পেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী হয়ে টক্কর দিচ্ছেন গত নির্বাচনের হেভিয়েট প্রার্থী জালাল উদ্দিন। এ ইউপিতে নৌকার প্রার্থী ইকবাল আহমদ চৌধুরীর আপন চাচাতো ভাই রিমন আহমদ চৌধুরী লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। সাবেক চেয়ারম্যান বুরহান উদ্দিন ও বিএনপি নেতা হাসান আহমদও ফ্যাক্টর প্রার্থী। মাঠ দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন জাপা নেতা আনোয়ার হোসেন হেলালী। কিন্তু শেষ সময়ে মুহুর্তে মুহুর্তে ভোটের হিসেব নিকেশ পরিবর্তন হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। সুলতানপুর ইউপিতে মোট ১৮ হাজার ৫১৮ জন ভোটার। বারঠাকুরী ইউপিতে দলের একক প্রার্থী ও দুবারের চেয়ারম্যান মহসিন মর্তুজা চৌধুরী টিপু। তাঁর সাথে ভোটের মাঠে পাল্লা দিচ্ছেন সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা নাছির উদ্দিন নছির। কৌশলে কেউ থেকে কেউ পিছিয়ে নেই। শক্ত প্রতিদ্ব›িদ্বতা গড়ে তুলতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিএনপি ঘরানো আক্তার হোসেন রাজু। এখানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাফিজ জিল্লুর রহমান তাপাদার হাতপাখা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসান আহমদ খাঁন প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আছেন। বারঠাকুরী ইউপিতে মোট ১৫ হাজার ৮৪৯ জন ভোটার। কসকনকপুরে নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক রিয়াজ। তার সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন লস্কর। এ ইউপিতে দলীয় নেতাকর্মীরা অনেকটা বিভক্ত। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার মঈন ও জাপার প্রার্থী সুলেমান লস্কর একটি ভোট ব্যাংক দখল করে রেখেছেন। শেষ পর্যন্ত ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা আছে। প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন চশমা। কসকনকপুর ইউপিতে মোট ১৪ হাজার ৫৫০জন ভোটার।

মানিকপুর ইউপিতে নৌকা মাঝি সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফর রায়হান শক্তিশালী অবস্থান তৈরী করে নিয়েছেন। এ ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মাহতাব আহমদ চৌধুরী ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জাহাঙ্গীর শাহ চৌধুরীর সাথে আবু জাফর রায়হানের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শিহাব উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী রশিদ আহমদ। শেষ পর্যন্ত হিসেব-নিকেশে পরিবর্তন ঘটলে ভোটের লড়াই দ্বিমুখী হতে পারে। মানিকপুর ইউপিতে মোট ২১ হাজার ৭২৮ জন ভোটার। তাছাড়াও ৯টি ইউপির সদস্য প্রার্থীরাও শেষ সময়ে নিরব প্রচারপ্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ভোটারদেরকে পক্ষে টানতে সকল পন্থাই অবলম্বন করে চলছেন। ঘুমহীন রাত পার করে বিজয় নিশ্চিতে শেষ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। মহিলা ও তরুণ ভোটারদের টার্গেট করে নিরবে গণসংযোগ করছেন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাদমান সাকীব জানিয়েছেন, অবাদ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কোনভাবেই কাউকে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ দেয়া হবেনা। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। ব্যালেট পেপার সকালে ভোট কেন্দ্রে পাঠানো হবে। নির্বাচনে সুষ্ঠুতা নিয়ে আশাঙ্কার কিছু নেই। সাধারণ মানুষের ভোটের প্রতিফলন হবে।

জকিগঞ্জ থানার ওসি আবুল কাসেম জানিয়েছেন, উৎসবমুখর পরিবেশে ৯টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যাক সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটের দিন কেউ প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন না। অবাদ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ করতে পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সুন্দরভাবে ভোট উৎসব শেষ করতে প্রার্থী, সমর্থক, সাংবাদিকসহ সকলের কাছে তিনি সহযোগিতা কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     আরো খবর